ভাষা শেখানোর সমন্বিত পদ্ধতি - Proshikkhon

ভাষা শেখানোর সমন্বিত পদ্ধতি

An integrated approach to language teaching

‘শিশুরা কীভাবে ভাষা শেখে?’ -এ প্রশ্নে ভাষাবিজ্ঞানীগণ বহুধাবিভক্ত। তবে মোটামুটিভাবে তারা একমত যে, আনুষ্ঠানিক পর্যায়ে নানাভাবে শিক্ষার্থী ভাষা শিখলেও তা মূলত তিনটি পদ্ধতিকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। এগুলো হলো:

১. বাক্যানুক্রমিক,

২. শব্দানুক্রমিক এবং

৩. বর্ণানুক্রমিক পদ্ধতি।

১. বর্ণক্রমিক পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য:

  • বর্ণক্রমিক পদ্ধতিতে প্রথমে শিক্ষার্থীদের বর্ণের মূলধ্বনি উচ্চারণে অভ্যস্থ করা হয়।
  • বর্ণ চিনে পড়তে বলা হয়।
  • তারপর বর্ণের সাথে কারচিহ্ন যুক্ত করে পড়ানো হয়।
  • বর্ণের সাথে বর্ণ যুক্ত করে শব্দের উচ্চারণ অনুশীলন করানো হয়।
  • শব্দে একই বর্ণের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানের জন্য উচ্চারণের কী পার্থক্য হয় তা অনুশীলন করানো হয়। যেমন- বল, খবর, আদাব ইত্যাদি।
  • শব্দ সহযোগে বাক্য পঠন।
  • লিখনের ক্ষেত্রেও অনুরূপ ক্রম অনুসরণ।

২.শব্দক্রমিক পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য:

এ পদ্ধতিতে পাঠের প্রথমে শেখানো হয় শব্দ। শব্দকে ভিত্তি করে এ পদ্ধতি গড়ে উঠেছে বলে এক শব্দানুক্রমিক বা সংক্ষেপে শব্দক্রমিক পদ্ধতি বলে। পাঠের জন্য শব্দ বাছাই করতে গিয়ে শিশুদের পরিচিত শব্দগুলোর ওপর জোর দিতে হয়। ফলে পাঠে শিশুর আনন্দ ও উৎসাহ বাড়ে। যে সকল শব্দের জন্য ছবি আঁকা যায় শুরুতে সেগুলি শেখানো হলে উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া মেলে। এ পদ্ধতিতে শেখানোর অনুক্রম হলো-   

  • শব্দ পড়ানো।
  • উচ্চারণ অনুযায়ী শব্দের অন্তর্গত বর্ণগুলোর অবস্থান জানা এবং তা পড়ানো।
  • উচ্চারণ অনুযায়ী বর্ণ শনাক্ত করানো।
  • শব্দে বর্ণের অবস্থান অনুযায়ী উচ্চারণ অনুশীলন করানো
  • শব্দ মিলিয়ে বাক্য পড়ানো।
  • লেখার জন্য প্রথমে বর্ণ, তারপর শব্দ ও শেষে বাক্য লেখানো।

৩. বাক্যক্রমিক পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য:

সুদীর্ঘকাল থেকে এ পদ্ধতি প্রচলিত। এ পদ্ধতি অনুযায়ী সুনিদিষ্ট অনুক্রম রক্ষা করে শিশুদের স্বর ও ব্যঞ্জন ধ্বনিগুলো শেখানো হয়। বর্ণগুলোর অনুশীলন মোটামুটি শেষ হলে শেখানো হয় স্বরচিহ্ন ও যুক্তাক্ষরগুলি। তারপর শেখানো হয় শব্দ গঠন। শব্দ গঠনের কাজ চলে দীর্ঘ সময় ধরে এবং বাক্য গঠনের কাজ আসে সব শেষে। এর অনুসরণীয় ধাপগুলো নিম্নরূপ:

  • প্রথমে বাক্য পড়া।
  • বাক্যের মধ্যস্থিত শব্দের অবস্থান নিরূপণ করে শব্দ পড়া ও উচ্চারণ অনুশীলন করা।
  • শব্দের উচ্চারণ অনুযায়ী শব্দ ভেঙে বর্ণ শনাক্ত করা ও বর্ণ চিনে পড়া।
  • শব্দে একই বর্ণের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানের জন্য উচ্চারণের কী পার্থক্য হয় তা অনুশীলন করানো হয়। যেমন- কমলা, ময়ূর, বাদাম ইত্যাদি।
  • লেখার জন্য প্রথমে বর্ণ, তারপর শব্দ ও শেষে বাক্য লেখানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!